সংসদ সদস্যদের ‘ইচ্ছে পূরণের প্রকল্প’ শেষ পর্যন্ত বাতিল হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় জাতীয় সংসদের সদস্যদের প্রত্যেকে প্রতিবছর ৪ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ পেতেন। সেই অর্থ দিয়ে তাঁরা নিজ নিজ এলাকায় ইচ্ছেমতো রাস্তাঘাট, সেতু-কালভার্টসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করার সুযোগ পেয়েছেন। তবে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মনে করে, সংসদ সদস্যদেরকে দেওয়া এই বরাদ্দ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে ‘অনিয়ম’ ও ‘লুণ্ঠন’ করা হয়েছে।
ছাত্র–জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইতিমধ্যে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ওই সংসদের বেশির ভাগ সদস্যকে ৫ আগস্টের পর আর জনসমক্ষে দেখা যায়নি। এখন এই প্রকল্পটি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কাজও শুরু করেছে।
প্রকল্পের নিয়ম ছিল—একজন সংসদ সদস্য নির্বাচনী এলাকায় রাস্তাঘাট, মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান ভবন বানাতে পারবেন। চাহিদা জানিয়ে তিনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে চিঠি দেবেন। পরে সংস্থাটি ওই সংসদ সদস্যের ইচ্ছে পূরণ করে রাস্তাঘাট বা অবকাঠামো বানিয়ে দেবে।
অভিযোগ রয়েছে, অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্বাচনী এলাকায় জনসাধারণের প্রয়োজনের চেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ব্যক্তিগত পছন্দ–পছন্দ এ ব্যাপারে বেশি প্রাধান্য পেত। প্রয়োজন থাকুক বা না–ই থাকুক, তাঁরা নিজেদের পছন্দের এলাকা বা নিজস্ব ভোটব্যাংকের এলাকায় রাস্তাঘাট বানানোর চাহিদাপত্র পাঠাতেন। সেই অনুসারে রাস্তাঘাট নির্মাণ করা হতো। আবার অনেক সময় এসব কাজের জন্য দলীয় বা পছন্দের লোকজনকে ঠিকাদার নিয়োগ করা হতো। এর ফলে লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।
-সংগৃহীত