মুন্সীগঞ্জের প্রধান সড়কের ভোরের অস্থায়ী সবজির হাটে এখন শীতকালীন সবজির সরব উপস্থিতি। কৃষকের ক্ষেত থেকে সরাসরি এনে এসব সবজি বিক্রি হওয়ায় ভোর থেকেই ক্রেতা–পাইকারদের ভিড়ে জমে উঠছে বাজার। যদিও পাইকারি পর্যায়ে সবজি প্রবাহ বাড়ছে, তবু খুচরা বাজারে দামে তেমন কোনো স্বস্তি নেই। কোথাও কোথাও কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত কমলেও, কিছু সবজির দাম উল্টো বেড়েছে।
এবারের মৌসুমে জেলায় শীতকালীন সবজির উৎপাদন বেড়েছে। তবুও বাজারে পৌঁছানোর পর দাম বেশ চড়া। নতুন আলুর কেজি ১৪০ টাকা হওয়ায় ক্রেতারা হতাশ, যেখানে হিমাগার থেকে বের হওয়া পুরোনো আলু বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫–১৮ টাকায়। বাজারে উঠেছে সীম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মূলা, লাউ, টমেটো, লাল শাকসহ নানান শীতের সবজি—তবে সব কটির দামই তুলনামূলক বেশি। কাঁচা মরিচ ১২০, ধনেপাতা ১৮০, টমেটো ১৩০–১৪০ এবং গাজর ১৪০–১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, সরবরাহ ভালো থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের কারণে দাম বাড়ছে। শিলমন্দির ইকবাল হোসেন বলেন, “ভোরের বাজারে দাম সহনীয় থাকে, কিন্তু সকাল ৮টার পর বাজারে গেলে দেখি দাম দ্বিগুণ। এটা স্পষ্ট সিন্ডিকেট।” কৃষকদের দাবি, পাইকারি পর্যায়ে দাম স্বাভাবিক থাকলেও ব্যবসায়ীরা সম্মিলিতভাবে দাম বাড়িয়ে দেন। আড়তদার রাজু মিয়া জানান, ভোরবেলায় কৃষকরা সরাসরি বিক্রি করায় দাম কম থাকে, পরে ব্যবসায়ীরাই তা বাড়িয়ে দেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এ মৌসুমে জেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। সরবরাহ আরও বাড়লে দাম স্থিতিশীল হবে। অতিরিক্ত উপ-পরিচালকের মতে, আলুর বহুমুখী ব্যবহার ও রফতানি বাড়ানো এখন প্রয়োজন।
ভোরের এই হাটে প্রতিদিন ২০–২৫ মেট্রিক টন সবজি বিক্রি হয়। সবজিভেদে দামও ভিন্ন—ফুলকপি ৩০–৫০, বাঁধাকপি ৫০–৬০, লাউ ৩০–৭০, শসা ৫০–৬০, খিরা ৭০–৮০, জিঙ্গা ৪০–৫০ এবং ধুন্দল–কহি ৪০–৬০ টাকায়। মসলাজাতীয় সবজির মধ্যে কাঁচা মরিচ ১২০, ধনেপাতা ১৮০ ও কেপসিকাম ২২০ টাকা কেজি। মৌসুমি আমলকি কেজিপ্রতি ২৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।