সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মুন্সীগঞ্জের পদ্মা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যেই চলছে মা ইলিশ ধরা ও বিক্রির উৎসব। শ্রীনগরের বাঘরা, লৌহজংয়ের কলমা ইউনিয়ন এবং টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সীমান্তসংলগ্ন নদীপয়েন্টগুলোতে প্রতিদিন বসছে ভাসমান মাছের হাট, যেখানে লাখ লাখ টাকার ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে।
লৌহজংয়ের মারৈল ও শামুরবাড়ি ঘাটে প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় কয়েক দফায় চলে ইলিশ বেচাকেনা। এখানে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়, আর দেড় কেজি ওজনের চারটি ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়।
স্থানীয়দের দাবি, শামুরবাড়ি এলাকায় লোকমান ওস্তাকার ও রাজিবের নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী প্রকাশ্যে ইলিশ বিক্রি করছে। মারৈল গ্রামে সেন্টু, আবুল, কুদ্দুস, দুলাল, দানেশ, সোহাগ ও শাকিলসহ অনেকেই নিয়ম ভেঙে প্রতিদিন মাছ ধরে এই ভাসমান হাটে বিক্রি করছে। এছাড়া সিডার চরের জসিমসহ কয়েকজনও একই কাজে যুক্ত রয়েছে।
এদিকে, প্রশাসনের দাবি—অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছারউদ্দিন বলেন, “পদ্মায় মা ইলিশ ধরা ঠেকাতে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য বিভাগ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। জাল জব্দ, জরিমানা ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যারা হাটে ইলিশ বিক্রি করছে, তাদের শনাক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, “ইলিশের প্রজনন মৌসুমে সরকার জেলেদের প্রতি পরিবারে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দিয়েছে, যাতে তারা মাছ ধরতে না যায়। এরপরও কিছু জেলে নিয়ম ভঙ্গ করছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি।” তিনি আরও বলেন, “নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে প্রতিদিন মৎস্য বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসার ও নৌ–পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে।”