মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরীর জন্য তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার চিত্রকোট ইউনিয়নের খারশুর এলাকার ঢাকা-দোহার সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে প্রকল্প এলাকার জমির মালিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ সময় পরিবেশ ও কৃষিজমি রক্ষায় বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীরা জানান, ইউনিয়নটির খারশুর মৌজার খারশুর, লালপুর, নয়াগাঁও, গীরিনগর, খারখোলা, মরিচা, বেনুখালী গ্রামগুলোর অন্তত ৫০০ পরিবারের তিন ফসলি জমি রয়েছে। এসব জমিতে কৃষিকাজ করে এই পরিবারগুলোর জীবিকা চলে। এখানে ধান ছাড়াও সব ধরনের শাকসবজি উৎপাদন করা হয়। সরকার জমি অধিগ্রহণ করে নিলে এসব পরিবারের সবাই কর্মহীন হয়ে পড়বেন। জমি ভরাটের কারণে পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়বে। তাই খারশুর মৌজায় জমি অধিগ্রহণ বন্ধ করতে হবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) বড়বর্তা মৌজায় ১০০ একর জমিতে বিসিক মুদ্রণ শিল্পনগরী প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই বছর কাজ শুরু করে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ সময় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৩৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তবে বড়বর্তায় জমি অধিগ্রহণে সমস্যা দেখা দেওয়ায় ২০২২ সালের শুরুর দিকে খারশুর মৌজায় প্রকল্পটি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। ২০২৩ সালে খারশুরে অনুমোদন হয়। ২৬৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২৭ সালের জুন মাসে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কৃষক ননি গোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘যেখানে জমি অধিগ্রহণ করার কথা, সেখানে আমার ৬৩ শতক জমি আছে। ওই জমিতে আলু, শর্ষে, ধান, পাট, মৌসুমি শাকসবজির চাষাবাদ করি। এতে যা আয় হয়, তা দিয়ে আমার দুই ছেলে-মেয়ের পড়াশোনাসহ পাঁচজনের সংসার চলে। সরকার জমি নিয়ে গেলে আমাদের সব শেষ হয়ে যাবে।