মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগরে ইছামতি নদীর পাড়ে প্রতিবারের ন্যায় এবারো শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক শেখরনগর কালি মন্দিরের কালী পূজা। এই উপলক্ষে মেলায় লাখ মানুষের ঢল নেমেছে।সনাতন ধর্মালম্বীদের ঐতিহ্যবাহী কালিপূঁজায় উপচে পড়া ঢল নেমেছে। শেখরনগর ঋষি সমিতির উদ্যোগে বাংলা ৯০১ সন থেকে কালিপূঁজা হয়ে আসছে। বর্তমানে এই কালিপূজার বয়স ৫৩০ বছরের বেশী । ইছামতির পাড়ে জেলার সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর কালি মন্দির প্রাঙ্গনে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এই পূজা। উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে সেখানে। সনাতন ধর্মালম্বীদের পূঁজা হলেও সেখানে সমাগম ঘটেছে সকল ধর্মের লোকের। এদিকে, সার্বজনীন উৎসবে রুপ নিয়েছে শেখরনগরের ইছামতির পাড়ের এই কালিপূঁজা। সনাতন ধর্মালম্বীদের ঐতিহ্যের এই পূঁজা আজ অসাম্প্রদায়িকতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কালির ভক্তরা ছুটে এসেছেন পূঁজায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলংকা ও নেপাল থেকে এ পূঁজায় সাধু-সন্যাসীদের সমাগম ঘটে থাকে। সাধু-সন্যাসীদের এক অভূতপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।এ পূঁজার প্রধান আকর্ষন হচ্ছে পাঠাবলি। আর পাঠাবলি দেখতে সেখানে মিলন ঘটবে সকল ধর্মালম্বীদের। আগামীকাল বুধবার ভোর থেকে পাঠাবলি দেওয়া শুরু হবে। এবার ২ হাজারের বেশি পাঠাবলি দেওয়া হবে বলে জানান কতৃপক্ষ। পূঁজা উপলক্ষ্যে ইছামতির পাড়ে বসেছে বিশাল মেলা। শতাধিক স্টল বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে মেলায়। রাত যত বাড়তে থাকে পুঁজা ও মেলা প্রাঙ্গনে লোক সমাগম তত বাড়তে থাকে। লাখো মানুষ সমাগম ঘটে এ পূঁজায়। বড়দের ছাড়াও ছোটদের মাঝে কালি মেলার জন্য সারা বছরের অপেক্ষা। শিশুদের জন্য নাগর দোলা, হর্স রেস ও রেলওয়ে ভ্রমন ব্যবস্থা রয়েছে রয়েছে মেলায়। লোহার তৈরী দা, কুড়াল, বটি, কাচি, হাসুয়া, কোদালসহ গৃহস্থালী কাজের রকমারি জিনিসপত্র পাওয়া যায়। বাঁশ ও কাঠের তৈরী নানা আসবাপত্র, কুটির শিল্পের নানা পন্য এবং মিষ্টান্নের সঙ্গে কসমেটিকস সামগ্রীতে সেজেছে মেলার স্টল গুলো। শেখরনগর ইউপি চেয়ারম্যান দেবব্রত সরকার টুটুল বলেন,‘৫৩০ বছরের পুরনো এ মেলা এ অঞ্চলের ঐতিহ্য বহন করে আসছে,এক দিনের পূজা হলেও মেলা চলে প্রায় সপ্তাহখানেক । পূজাকে কেন্দ্র করে সকল ধর্মের মানুষের মাঝে উৎসবের আমেজ তৈরী হয়। শেখরনগর কালি মন্দিরের পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন চন্দ্র দাস বলেন- ‘কালি পূঁজা ও মেলায় লাখো মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। বুধবার ভোর ৫ টা থেকে কালি মন্দিরে পাঠাবলি শুরু হবে। আইন শূঙখলা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন থেকেও আমাদের সাথে একাধিক মিটিং হয়েছে । সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ শাহেদ আল মামুন বলেন- ‘কালী পূজার মেলাকে ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ৩ শতাধিক আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। শান্তিপূর্ন পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন পাশে আছে বলেও জানান তিনি।’