মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রায় ৬০০ মিটার দীর্ঘ একটি ঐতিহ্যবাহী খাল দখল ও ভরাটের কারণে বর্তমানে ডোবায় পরিণত হয়েছে। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
ভূমি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের সড়ক থেকে শুরু হয়ে খালটি পাঁচঘরিয়াকান্দি ও মুন্সিরহাট হয়ে রজতরেখা নদীতে মিলেছে। একসময় খালটির প্রস্থ ছিল ৩০–৪০ ফুট, যেখানে বড় নৌকাও চলাচল করত। খালপাড়ের মানুষ জানাচ্ছেন, একসময় রান্না, গোসলসহ নানা কাজে এর পানি ব্যবহার হতো এবং বর্ষায় শহরের পানি নিষ্কাশনের প্রধান মাধ্যম ছিল এ খাল।
তবে ধীরে ধীরে দখল, ভরাট ও দূষণে খালের অস্তিত্ব হারিয়ে যায়। পৌরসভার সিদ্ধান্তে গত সরকারের আমলে খালের ওপর প্রায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি নালা নির্মাণ করা হয়। এতে খালের প্রাকৃতিক প্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসানের বাড়ি রক্ষার জন্যই এ নালা নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে নালার পাশের জমি ভরাট করে নতুন নতুন বহুতল ভবনও তৈরি হচ্ছে।
এদিকে, খাল ভরাটের ফলে শহরে জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে। সুপারমার্কেট, ফার্নিচারপট্টি, বাজার, হাসপাতাল ও থানা সড়ক—সবখানেই বর্ষায় হাঁটুসমান পানি জমে থাকে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) মুন্সিগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, খাল ভরাট করে নালা নির্মাণ একেবারেই অযৌক্তিক, আত্মঘাতী ও পরিবেশবিরোধী সিদ্ধান্ত। খালকে প্রাকৃতিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা হিসেবেই রাখা উচিত ছিল।