মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে আদালতের কর্মস্থলে আসার পথে মো:মিজানুর রহমান(৪৫) নামের এক আদালতের অফিস সহকারীর আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে। বুকে ব্যাথায় যন্ত্রণায় রাস্তার মধ্যেই ঢলে পড়ে মৃত্যু বরণ করেন মিজানুর রহমান। বুধবার (৪সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে অফিস থেকে ফোন পেয়ে অসুস্থ শরীর নিয়ে আদালতের কর্মস্থলে আসার পথে গজারিয়া উপজেলার ষোলআনী ঝাপটা সড়কে ঢলে পড়ে সড়কেই মারা যায় ওই অফিস সহকারী। মৃত মো:মিজানুর রহমান মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের চর কালিপুরা বেরু মোল্লাকান্দি গ্রামের মৃত নুরুল ইসলাম মোল্লার ছেলে। নিহত মিজানুর রহমানের স্ত্রী লিজা আক্তার জানান, এক সপ্তাহ যাবৎ আমার স্বামী অসুস্থ ছিল। তিনি শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। আমার এক ছেলে দুই মেয়ে ও স্বামীকে নিয়ে সংসার করতেছি। আমার ছেলেটা প্রতিবন্ধী। মঙ্গলবারও অফিস করে সে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে যায়। পরে সে ছুটি চেয়েছিল কিন্তু অফিস তাকে ছুটি দেয় নাই। আজ সকালে অফিস থেকে ফোন আসলে অসুস্থ শরীর নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁরা যদি আমার স্বামীকে ছুটি দিত তাইলে আমরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অফিস সহায়ক জানান, মিজানুর রহমান মুন্সীগঞ্জের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত -৩ কর্মরত ছিলেন মিজানুর রহমান। ওই আদালতের বিচারক নাজমিন আক্তার মাতৃকালীন ছুটিতে থাকায় অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব পালন করছিলেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪এর বিচারক মো:শহিদুল ইসলামের আদালতে। মিজানুর অসুস্থ থাকায় ছুটি চাইলে তিনিই ছুটি দেন নাই মিজানকে। এ দিকে অফিস সহকর্মীর মৃত্যুতে শোকাবহ অফিস সহায়ক’রা ও আদালতের অন্যান্য বিচারকগণ সহ একযোগে বুধবার আদালতের দৈনিকের কাজ দ্রুত শেষ করে নিহতের বাড়িতে উপস্থিত হলে এক হৃদয় বিদায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। মৃতের বড় ভাই আলী আহমেদ মোল্লা বলেন, আমার ভাইয়ের এক ছেলে, দুইটা মেয়ে। ছেলেটা অটিজম আক্রান্ত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। আমার অসুস্থ ভাইকে যে বিচারক ছুটি দেননি আমরা ওই বিচারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। এ বিষয়ে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো:শহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। গজারিয়ার ইমামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাফিজুজ্জামান খাঁন জিতু বলেন,ছেলেটা আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা, অনেক ভাল একটা ছেলে ছিল,ঘটনাটা শুনে মর্মাহত হয়েছি।