মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর সেতুর টোল কমিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবি উঠেছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে। গেল কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছে তারা।
শিক্ষার্থীরা বলছে, এই সেতুতে পণ্যবাহী যানের তুলনায় যাত্রীবাহী পরিবহন যেমন- বাস-সিএনজি-মোটরসাইকেল-অটোরিকশার মত যানবাহনের চলাচল বেশি। টোল বৃদ্ধির অযুহাতে এসব যানের কতৃপক্ষ-চালক যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করেন। তাই যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোর টোল কমিয়ে আনলে সাধারণ যাত্রীরা এর সুবিধা পাবেন।
মুক্তারপুর সেতু চালু হয় ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সে হিসাবে ১৬ বছর ধরে টোল আদায় হচ্ছে সেতুতে। সর্বশেষ এই সেতুর টোল বৃদ্ধি করা হয় ২০২১ সালের নভেম্বরে। সরকারি হিসাব-বিশ্লেষণ বলছে, ২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গড়ে প্রতিদিন ৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৯ লাখ টাকা ও বছরে গড়ে ১০ কোটি টাকা টোল আদায় হয়েছে মুক্তারপুর সেতু থেকে।
এর আগের ১৪ বছরের টোল আদায়ের হিসাব সেতু কতৃপক্ষের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা যায়, ওই বছরগুলোতেও সমপরিমাণ টোল আদায় হয়েছে মুক্তারপুর সেতু থেকে। সবমিলিয়ে ১৬ বছরে গড়ে ১০ কোটি করে হিসাব করলে টোল আদায় হয়েছে ১৬০ কোটি টাকার কম-বেশি।
সেতু বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০৮.৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে ধলেশ্বরী নদীর উপর চায়না রোড এন্ড ব্রীজ কর্পোরেশন (সিআরবিসি) ২০০৫ সালের জুলাইতে ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নামে এই সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে। শেষ হয় ২০০৮ সালের জানুয়ারীতে আর উদ্বোধন হয় ফেব্রুয়ারিতে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ব্যায় করে ৭৯.১৫ কোটি টাকা আর বাকি ১২৯.২০ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে সাহায্য করে চীন সরকার।
বর্তমানে মুক্তারপুর সেতুতে মোটরসাইকেল/ভ্যানের জন্য টোল নেয়া হয় ১৫ টাকা, সিএনজির জন্য ৩০ টাকা। আগে ছিলো যথাক্রমে ১০ ও ২০ টাকা। প্রাইভেট কার–টেম্পো, জীপ-মাইক্রো, পিকআপের জন্য টোল নেয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের আগে নেওয়া হতো ৪০ টাকা।
ছোট ও বড় বাসের টোল ৫০ টাকা করে বাড়িয়ে যথাক্রমে দেড় শ ও আড়াই শ টাকা করা নেয়া হচ্ছে বর্তমানে। ট্রাকের টোলও বাড়ানো হয়েছে ৫০ টাকা করে।
আগে ট্রেইলরের জন্য আলাদা টোল হার না থাকলেও নতুন করে তা যুক্ত হয়েছে। এগুলোর শ্রেণিভেদে টোলের হার ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৩৭টি স্প্যানের উপর দাড়ানো ১হাজার ৫২১ মি. দৈর্ঘ্য ও ১০ মি. প্রস্তের দুই লেনের এই সেতুটি মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুর এলাকার সাথে নারায়ণগঞ্জ-ঢাকার যোগাযোগ সহজ করেছে। কিন্তু এর টোল হার নিয়ে আপত্তি উঠেছে শিক্ষার্থীদের পক্ষ হতে।
মুক্তারপুর সেতু সাইড অফিসে কর্মরত সেতু কতৃপক্ষের সহকারি প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘টোল কমানোর বিষয়ে সেতু কর্তৃপক্ষ বরাবর শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে হবে। সেতু কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশনা দিবে ওই অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
-সংগৃহীত