মালয়েশিয়ায় একটি রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে ৩ বাংলাদেশির মৃত্যুর ঘটনায় নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অভিযোগ মালয়েশিয়ায় অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর নিহতরা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য রাস্তায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স যথাসময়ে না আসায় তারা রাস্তার মধ্যে শুয়ে গড়াগড়ি করছিলেন। তাদের যথাসময়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে তারা মারা যেতেন না।
নিহত আবু তাহেরের ছোট ভাই তপন মিয়া বলেন, আমার ভাইসহ যারা মালয়েশিয়ায় মারা গেলো তারা তো সেই দেশে বৈধ লোক ছিল, অবৈধ ছিল না। কিন্তু যখন মালয়েশিয়ার জোহরবার্গে কারখানায় আগুন লাগছে আগুনে আমার ভাইসহ নিহতরা দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কিন্তু কোনো অ্যাম্বুলেন্স আসে নাই। অ্যাম্বুলেন্স না আসায় তারা রোদে রাস্তার মধ্য শুয়ে গড়াগড়ি করছিল। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের কেউ কোনো খোঁজ খবর নেয়নি। যদি তারা খোঁজখবর নিতো তাহলে তিনটা লোকই বেঁচে যেতো।
নিহত আলি জব্বারের ছোট বোন নাজিফা বলেন, আমার ভাই অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পর অ্যাম্বুলেন্সের জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। আমার ভাইয়ের চিকিৎসা হলো না কেন? আমার ভাই আগুনে পুরে রাস্তায় গড়াগড়ি খেয়েছে, পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে। অ্যাম্বুলেন্স অ্যাম্বুলেন্স কইছে কিন্তু কোনো অ্যাম্বুলেন্স আসে নাই। যদি এর বিচার না হয় আমি মরে গিয়া সরকারের বিরুদ্ধে লেইখা দিয়া যামু। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাবা মাসহ তিন ভাই পাঁচ বোনের সংসার তিনিই দেখাশোনা করতেন। এখন জানি না কীভাবে সংসার চলবে। প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করলে আমার ভাইয়ের লাশ দেশে নিয়ে আসতে পারতাম।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফিফা খান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করা হয়েছে। তাদের লাশ আনতে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পরিবারগুলোর পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফাতেমা তুল জান্নাত বলেন, মরদেহগুলো দ্রুত কীভাবে দেশে আনা যায় সে বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। সেইসঙ্গে নিহতের পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা করা যায় সবটুকু করা হবে।