বাংলাদেশে শীতকাল আবহাওয়ার স্বাভাবিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যাও নিয়ে আসে। এ সময় ঠান্ডা-জনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে যায় এবং বয়স্ক, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। সর্দি, কাশি, অ্যাজমা, ব্রঙ্কাইটিস, গলা ব্যথা ও ফ্লু জাতীয় রোগ এসময় বেশি দেখা যায়। তাই, শীতকালীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য কিছু কার্যকর প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
শীতকালে শরীরের উষ্ণতা ধরে রাখতে গরম কাপড় পরা উচিত। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের উষ্ণতা রক্ষার জন্য ভালো মানের গরম পোশাক এবং কভার ব্যবহার করা উচিত। বাইরে বের হলে মাথা ও কানে গরম টুপি, মোজা এবং গ্লাভস পরার চেষ্টা করুন।
শীতে সুস্থ থাকতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল, সবজি ও পানি বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত। লেবু, কমলা, আমলকী, টমেটো প্রভৃতি খাবার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পানি পান কমে গেলে শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের অভ্যাস রাখতে হবে।
শীতকালে শরীর গরম রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম অত্যন্ত কার্যকর। প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণ হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। এ ছাড়া, শীতের কুয়াশামুক্ত দিনের কিছুটা সময় সূর্যের আলো গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, যা শরীরে ভিটামিন ডি সরবরাহ করে।
শীতকালে বাতাসে ধুলা ও দূষণের পরিমাণ বেড়ে যায়, যা শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়িয়ে দেয়। বিশেষ করে যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টে ভুগছেন, তাদের বাইরে বের হলে মাস্ক পরা উচিত।
শীতকালে ফ্লু এবং অন্যান্য ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এ জন্য নিয়মিত হাত ধোয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। মাস্ক পরা এবং ভিড় এড়িয়ে চলা রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
পর্যাপ্ত ঘুম শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে রাতের দিকে ঘুমের পরিবেশ তৈরি করতে ভারী কম্বল বা লেপ ব্যবহার করে উষ্ণতা ধরে রাখুন।
সবশেষে, শীতকালীন স্বাস্থ্যসুরক্ষা শুধু ব্যক্তিগত নয়, বরং সামগ্রিক পরিবারের সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই আসন্ন শীতের জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিন এবং সুস্থ থাকুন।