বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলিম বন্ধুত্বের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। এই দেশটি তার জন্মলগ্ন থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য মডেল হিসেবে পরিচিত। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে হিন্দু ও মুসলিমরা এখানে একসঙ্গে বসবাস করে আসছে, এবং তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, এবং সহানুভূতি দিয়ে গড়ে উঠেছে এক অসাধারণ বন্ধন।
বাংলাদেশের গ্রাম বা শহর, যেকোনো জায়গায় দেখা যায় হিন্দু ও মুসলিম প্রতিবেশীরা একে অপরের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হয়ে আছেন। ধর্মীয় উৎসবগুলোতে পরস্পরের প্রতি যে সহযোগিতা এবং আন্তরিকতার প্রদর্শন করা হয়, তা এই বন্ধুত্বের অন্যতম উদাহরণ। দুর্গাপূজা থেকে শুরু করে ঈদ—সবকিছুতেই দেখা যায় একে অপরের বাড়িতে গিয়ে মিষ্টি মুখ করা, শুভেচ্ছা বিনিময় করা এবং আনন্দ ভাগাভাগি করা।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আমরা দেখেছি এই দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর বন্ধন। হিন্দু-মুসলিম এক হয়ে যুদ্ধ করেছে, একে অপরকে রক্ষা করেছে, এবং তাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই ঘটনাগুলোই প্রমাণ করে যে, ধর্ম কখনো আমাদের ঐক্যকে ভাঙতে পারে না। আমাদের ঐক্য অনেক গভীর, আমাদের বন্ধন অনেক শক্তিশালী।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, হিন্দু-মুসলিম বন্ধুত্ব শুধুমাত্র সহাবস্থানের উদাহরণ নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্কুলে, কর্মস্থলে, এবং সামাজিক আচার-অনুষ্ঠানে হিন্দু ও মুসলিমরা পাশাপাশি বসবাস করে এবং পরস্পরকে ভালোবাসে। এই ভালোবাসা ও বন্ধুত্বই আমাদের দেশের প্রকৃত সৌন্দর্য।
আমরা বিশ্বাস করি, এই সম্প্রীতির বন্ধন আমাদের দেশের মজবুত ভিত্তি। আমাদের উচিত এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করা, যাতে কোনো ধরনের বিভাজন বা উস্কানিতে আমাদের ঐক্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে আমাদের হিন্দু-মুসলিম বন্ধুত্বকে আরও গভীর করি এবং একে অন্যের পাশে থেকে বাংলাদেশকে একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলি।
সহমর্মিতা, সম্প্রীতি, এবং বন্ধুত্ব—এই তিনটি গুণেই গড়ে উঠুক আমাদের সবার বাংলাদেশ।