রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন কলেজের পাশে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রায় ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স আহতদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে গেছে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, সেখানে অন্তত ৩০ জনের শরীরের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। আহতদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠানটির স্টাফ রয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এছাড়া শতাধিক শিক্ষার্থীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে ‘এফ-৭ বিজিআই’ মডেলের বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই মাইলস্টোন কলেজের মাঠসংলগ্ন একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়। বিকট বিস্ফোরণ এবং আগুনের গোলায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছে যায় এবং আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়। উদ্ধার কার্যক্রমে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও যুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজে প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। হঠাৎ এই দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ছুটোছুটি শুরু করে, কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়ে, অনেকেই পাশের রুম থেকে মাঠে দৌড়ে যায়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই অভিভাবকরা সন্তানদের খোঁজে ছুটে আসেন এবং কলেজের সামনে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
মাইলস্টোন কলেজের জনসংযোগ কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ বিকট শব্দে সবাই ভীত হয়ে পড়ে। শিক্ষকদের তৎপরতায় শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং আহত কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে খবর পেয়ে আটটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় এবং পরে আরও দুটি ইউনিট যোগ দেয়। স্থানীয় বাসিন্দা, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছেন।