চার তলা ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীর দেখা নেই মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনীমণ্ডল গালর্স কলেজে। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজ এখন টিকে থাকার লড়াই করছে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে। ৩২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো এমপিওভুক্ত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
একজন স্থায়ী শিক্ষক, চারজন খণ্ডকালীন শিক্ষক ও একজন আয়া দিয়েই চলছে কলেজের কার্যক্রম। শিক্ষকদের কেউই নিয়মিত নন—বেতন না থাকায় অনেকে অন্যত্র কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবুও প্রতি বছর নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে কলেজের ১১টি বিষয়ে স্বীকৃতি নবায়ন করা হয়।
স্থানীয়দের মতে, এমপিওভুক্ত না হওয়ায় শিক্ষক সংকট ও আর্থিক অনটন দীর্ঘদিনের সমস্যা। কলেজটিতে কেবল মানবিক শাখা চালু রয়েছে। গত বছর চারজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিলেও মাত্র একজন পাস করেছে। অথচ লৌহজং উপজেলার ১২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর কয়েক শত শিক্ষার্থী এসএসসি পাস করে বের হলেও তারা সরকারি লৌহজং কলেজ, ইউনুস খান মেমোরিয়াল কলেজ বা পার্শ্ববর্তী শ্রীনগর ও ঢাকার কলেজগুলোতে ভর্তি হচ্ছে।
দক্ষিণ মেদিনীমণ্ডল গ্রামের শিক্ষানুরাগী জলিল হাওলাদার নারীদের শিক্ষার প্রসারে এক একর জমি দান করে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৪ সালের ২১ নভেম্বর সাবেক সংসদ সদস্য (অব.) এম হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীককে প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি করে কলেজের যাত্রা শুরু হয়।
বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, বহুদিন ধরে কলেজটি অনুদানহীন অবস্থায় চলছে। অর্থের অভাবে শিক্ষক নিয়োগ বা স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না। কলেজের অধ্যক্ষ রোজিনা আক্তার বলেন, “বেতন দিতে না পারায় শিক্ষকরা নিয়মিত আসতে পারেন না। এমপিওভুক্ত হলে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।”
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন জানান, কলেজটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রশাসন সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।