সরকারি ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মুন্সিগঞ্জের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে রাতের আঁধারে অবাধে চলছে মা ইলিশ শিকার। ভোর হলেই নদীর তীরে বসছে ভাসমান ইলিশের হাট, যেখানে পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের ভিড়ে রীতিমতো উৎসবের আমেজ দেখা যাচ্ছে।
নিরাপত্তার কারণে প্রশাসন রাতে অভিযান চালাতে না পারায় সুযোগ নিচ্ছেন অসাধু জেলেরা। প্রতিদিনই কয়েকশ মণ মা ইলিশ নিধন করে নদীতীরবর্তী গ্রামগুলোতে অস্থায়ী আড়ত বসিয়ে দেদারসে বিক্রি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জ সদর, লৌহজং, শ্রীনগর, টঙ্গীবাড়ি ও গজারিয়া উপজেলার নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোয় জেলেরা সক্রিয়ভাবে মা ইলিশ ধরছেন। সদরের চরআব্দুল্লাহ, বকচর, কালীরচর ও লৌহজংয়ের তেউটিয়া, শাহিনহাটী, পাইকারা চরে প্রতিদিন বসছে ইলিশের হাট। একই দৃশ্য শ্রীনগরের ভাগ্যকুল ও বাঘড়া, টঙ্গীবাড়ির চর বেহেরপাড়া ও হাসাইল এলাকাতেও দেখা যাচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ইলিশ ধরা পড়ছে লৌহজং ও শরীয়তপুরের জাজিরা সীমান্তবর্তী পদ্মার ছিডারচর ও বাবুরচরে। সেখানে জেলেরা নদীর ধারে ভাসমান ট্রলারে মাছ বিক্রি করছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, তীরে শামিয়ানা টাঙিয়ে বসানো দোকান, শতাধিক ক্রেতা ও একাধিক ট্রলারভর্তি ইলিশ কেনাবেচা চলছে অবাধে।
স্থানীয় জেলেরা অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের দেওয়া চাল দিয়ে সংসার চলে না, তাই বাধ্য হয়েই তারা রাতে মাছ ধরেন। এক জেলে বলেন, “বাঁচার তাগিদে মাছ ধরতেই হয়। পুলিশ এলে লুকিয়ে পড়ি, না এলে জাল ফেলি।”
শ্রীনগরের বাঘড়া এলাকার এক বাসিন্দা জানান, আগের চেয়ে এ বছর মাছ ধরা ও বিক্রি বেড়েছে। এখানে এখন রীতিমতো উৎসবের মতো পরিবেশ। এক বিক্রেতা জানান, এক কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি দুই হাজার টাকায়, আর ছোট সাইজের দাম ৮০০ টাকা।
ভাগ্যকূলের স্থানীয় গাজী কাউসার বলেন, “মৎস্য অফিস এবার ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ছাড়া এসব বন্ধ হবে না।”
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে। অনেক জেলেকে জেল ও জরিমানা করা হয়েছে, তবুও কিছু অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরছেন।